কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগে বাড়বে রাজস্ব আয়

কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগে বাড়বে রাজস্ব আয়

বাড়ি ও ফ্ল্যাট নিবন্ধন ব্যয় কমিয়ে ৭ শতাংশ নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে আবাসন খাতের সংগঠন বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশন (বিএলডিএ) এবং রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়ে এনবিআর আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় আবাসন খাতের সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে আগামী বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে এসব দাবি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অর্থপাচার রোধে বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখা, সেকেন্ডারি বাজারব্যবস্থা গতিশীল করতে নিবন্ধন খরচ মোট ৩ শতাংশ নির্ধারণ এবং আবাসন খাতে অর্থ সরবরাহ বাড়াতে বিশেষ তহবিল গঠনেরও প্রস্তাব করেছে বিএলডিএ এবং রিহ্যাব।
রিহ্যাবের পক্ষ থেকে সংগঠনটির সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন এবং বিএলডিএর পক্ষ থেকে সংগঠনের সচিব নওশেরুল আলম বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের সহসভাপতি কামাল মাহ্মুদ এবং এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। প্রাক-বাজেট আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

রিহ্যাব সভাপতি বলেন, নিবন্ধন অধিদপ্তরের হিসাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরে আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা নিবন্ধন খাতে সাত হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এর আগের কয়েক বছর এই আয়ের পরিমাণ ছিল প্রতিবছর ১১ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা। করোনাকালীন সংকটে ফ্ল্যাট ও প্লট বিক্রি কমে যাওয়ায় নিবন্ধন খাতে আয় কমেছে। নিবন্ধন ছাড়াও আবাসন খাত থেকে ভ্যাট ও অন্যান্য কর বাবদ সরকারের আয় কয়েক হাজার কোটি টাকা। করোনাকালীন সংকট কাটিয়ে উঠতে আগামী বাজেটে রাজস্ব ছাড় দেওয়া প্রয়োজন।
আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, সরকার আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগে ছাড় দেওয়ায় বড় অঙ্কের অর্থ অর্থনীতির মূলধারায় ফিরে আসার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এই সুযোগ দেওয়ায় প্রায় এক হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে। তাই এ দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ধারা বজায় রাখতে আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখা এখন সময়ের দাবি।
আবাসন খাতের বিভিন্ন সংগঠনের লিখিত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে দেশের আবাসনশিল্প মহাসংকটে আছে। গত এক বছরের অর্থনৈতিক মন্দা, জমির আকাশচুম্বী মূল্য ও বাড়ি বা ফ্ল্যাট নির্মাণে জমির সংকট, দেশের অভ্যন্তরে নতুন গ্যাস সংযোগ প্রাপ্তিতে সাময়িক স্থগিতাদেশ এবং নির্মাণসামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে এই খাত স্থবির হয়ে পড়েছে। ওদিকে শেয়ারবাজারের ধস এবং বিভিন্ন ব্যাংক ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের ঋণ প্রবাহ কমে যাওয়ায় এই খাতে ভয়াবহ তারল্য সংকটসহ মূলধন ব্যয় জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আগামী অর্থবছরে আবাসন খাত বাঁচাতে সরকারকে আন্তরিক হতে হবে। এনবিআর চেয়ারম্যান সভাপতির বক্তৃতায় আবাসন খাতের গতিশীলতায় আগামী বাজেটে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *