রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল বামেরা। ভোটের মৌসুমে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আপাতত বড় জমায়েত বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল সিপিএম। পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বুধবার একথা জানিয়েছেন। ভোটের বাংলায় যেখানে বাকি দলগুলি মিটিং-মিছিল-পদযাত্রায় মন দিয়েছে, সেখানে সংযুক্ত মোর্চার অন্যতম শরিক সিপিএমের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন।
রাজ্যে ভোট শুরুর বেশ কিছুদিন আগে থেকেই করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকে। এই মুহূর্তে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি অনেককেই গত বছরের সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। তার ওপর চলছে রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচার মিছিল ও সভা। ফলে আতঙ্ক বাড়ছে সাধারণ মানুষের মনে। গত সাত দিনে প্রতিদিন গড়ে রাজ্যে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের এখনো চার দফা ভোট বাকি। তাই এরই মধ্যে রোজই রাজ্যের কোথাও না কোথাও কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের মিটিং-মিছিল, রোড শো থাকছেই। এর থেকে করোনা সংক্রমণের একটা বিরাট সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। এই বিষয়গুলো বিবেচনা করেই ভোটের কাজে রাস্তায় বড় কোনো জমায়েত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম।
‘আপাতত অল্পসংখ্যক কর্মী-সমর্থককে নিয়ে ছোট ছোট সভা করা হবে। প্রার্থীসহ হাতে গোনা কয়েকজন যাবেন বাড়ি বাড়ি প্রচারে। বড় কোনো সভা, সমিতি বা মিছিল, রোড শো করা হবে না, বললেন সেলিম।
বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম করোনা মোকাবেলায় কেন্দ্র ও রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করোনা মোকাবেলায় জোর দেওয়া উচিত। কিন্তু দুজনই এখন মেরুকরণের রাজনীতিতে ব্যস্ত। ভোট রাজনীতি করতে মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করছেন। এমনকি ভ্যাকসিন নিয়েও দুই সরকার উদাসীন।’
এদিকে বুধবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জলপাইগুড়ির জনসভা থেকে অভিযোগ করেছিলেন, বিজেপির কারণেই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে করোনাভাইরাস। বিজেপি’র বহিরাগতরা রাজ্যে প্রচারে এসে করোনা ছড়িয়ে যাচ্ছেন। রাজ্যের পক্ষে একাধিকবার ভ্যাকসিনের জন্য আবেদন করা হলেও কেন্দ্র তা দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে জলপাইগুড়ি সদরের তৃণমূল প্রার্থী করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে।
Source: kalerkantho