প্রতিদিন ১০০ অসহায়কে খাবার দেন এসপি ও তার স্ত্রী

মানিকগঞ্জ, ১০ মে– সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টা। মানিকগঞ্জ ধলেশ্বরী নদী পাড়ে বেদে পল্লীর সামনে থামলো পুলিশের একটি পিকআপভ্যান। সাধারণত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ছুটে চলে পুলিশের এই পিকআপ ভ্যানটি।

কিন্তু আজ তারা এসেছেন একটি মানবিক ও মহৎকাজের অংশ হতে। পুলিশ সদস্যরা পিকআপ থেকে একে একে বের করে আনলেন খাবারের প্যাকেট। তুলে দিলেন বেদে পল্লীর নারী-পুরুষের হাতে। বেদে সম্প্রদায়ের মানুষজনও হাসি মুখে সেগুলো গ্রহণ করলেন।

এর কিছুক্ষণ পরে পুলিশের পিকআপভ্যানটি ভিড়লো মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। একইভাবে তারা কয়েকজন রিকশাচালক ও হকারের হাতে তুলে দিলেন এই প্যাকেট।

পুরো রমজান মাসজুড়েই বেদে সম্প্রদায়, দিনমজুর, রিকশাচালক, অসহায় ও ছিন্নমূল পথ শিশুদের মাঝে এভাবে রান্না করা খাবার বিতরণ করছেন মানিকগঞ্জের পুলিশ সদস্যরা। খাবার বিতরণে তাদের অনেক সময় সহযোগিতা করছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেবাতরী ফাউন্ডেশন।

জেলার পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম ও তার সহধর্মিণী ঢাকা কলেজের সহকারী অধ্যাপক আফসানা শিরীন তাদের ব্যক্তিগত তহবীল থেকে এই খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।

জেলার পুলিশ লাইনে খাবার রান্নার পর প্যাকেটজাত করে তা পৌঁছে দেয়া হয় মানুষের হাতে হাতে। কখনো তেহেরি, বিরিয়ানি, খিচুড়ি অথবা মুড়ি পেঁয়াজু। মানিকগঞ্জ শহর ও এর আশপাশের এলাকায় প্রতিদিন ১০০ জন অসহায় ও নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে ইফতারি হিসেবে এই খাবার বিতরণ করা হয়।

এছাড়া পুলিশ সুপারের ব্যক্তিগত উদ্যোগে সোমবার ১০০ জন অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয় ঈদ উপহার। উপহার সামগ্রীর মধ্যে ছিল সেমাই, চিনি, গুড়াদুধ, পোলার চাল, পেঁয়াজ, মসলা, কাপড় এবং নগদ টাকা।

অনেকটা গোপনেই চলছে পুলিশ সুপার ও তার সহধর্মিণীর এই মানবিক সহযোগিতার কর্মসূচি। তারপরও যারা জেনেছেন তারাই প্রশংসা করেছেন উদ্যোগটির। এমন কাজের সঙ্গি হতে পেরে খুশি পুলিশ সদ্যরাও।

মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম জানান, ছোটবেলা থেকে বাসায় দেখেছি মা-বাবা রোজার সময় প্রতিবেশিদের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণসহ মানুষকে নানাভাবে সহযোগিতা করতেন। সেখান থেকেই মূলত প্রেরণা।চেষ্টা করি মানুষের পাশে থাকার জন্য।

আামার সহধর্মিণীও তাই। তিনিও মানুষকে সবসময় সহযোগিতা করেন। আর মানুষ হিসাবে যদি মানুষের কাজেই না লাগি তাহলে জন্মবৃথা। বর্তমানে একটা মহামারি পার করছি আমরা এই সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানো খুবই প্রয়োজন।

সূত্র: জাগো নিউজ
এম এন / ১০ মে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *