নারীর দুঃসাহসিক ঈদ যাত্রা |

১৪ ঘণ্টা সাইকেল চালিয়ে সান্তাহারের নিজ বাড়িতে পৌঁছেন মৌসুমি।

করোনায় কঠোর বিধি-নিষেধের কারণে দূরপাল্লার বাস বন্ধ। চলছে না ট্রেন। ঈদে স্বজনের সান্নিধ্য পেতে গ্রামে ফেরা চাই-ই চাই। কিন্তু উপায়! অন্যদের চেনা পথে হাঁটলেন না তিনি। দুঃসাহসিক এক ঈদ যাত্রায় পা বাড়ালেন বগুড়ার সান্তাহারের মেয়ে মৌসুমি আক্তার এপি। রোজা রেখেই রাজধানী ঢাকা থেকে বাইসাইকেল চালিয়ে ২৮০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে বগুড়ার সান্তাহারের বাড়িতে ফেরেন এই সাহসী নারী। এপি রাজধানীর বনানীর চিটাগাং গ্রামার স্কুল ঢাকা নামের একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক। থাকেন ঢাকার গোলাপবাগে।

গত সোমবার বিকেল ৪টার দিকে গোলাপবাগ থেকে বাইসাইকেলে রওনা দেন তিনি। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন সিরাজগঞ্জের মীর রাসেল নামের এক ছাত্র। দুজন টানা বাইসাইকেল চালিয়ে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের ভূঁইয়াগাতি এলাকায় পৌঁছেন। সেখানেই রাসেলের বাড়ি। রাসেল বাড়ি ফিরলে সেখানে একা হয়ে যান এপি। পরে তিনি একাই বাইসাইকেল চালিয়ে পৌঁছেন বগুড়ায়। সেখানে যাত্রাবিরতির পর বান্ধবী মালার বাসায় সাহরি শেষে সকাল ৬টার দিকে তিনি ফের সান্তাহারের উদ্দেশে রওনা দেন। বৃষ্টির কারণে যাত্রায় কিছুটা বিঘ্ন হলেও দমে যাননি তিনি। শেষমেশ ১৪ ঘণ্টা বাইসাইকেল চালিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে পৌঁছেন সান্তাহারে।

বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার পৌর শহরের রথবাড়ি মহল্লার বাসিন্দা আব্দুল হাকিম তালুকদারের মেয়ে এপি। তিনি জানান, লকডাউনের কারণে ট্রেন ও দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় অন্য কোনো যানবাহনে গাদাগাদি করেই বাড়ি ফিরতে হতো। করোনা সংক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচাতে বাড়ি ফিরতে এমন উদ্যোগ নেন তিনি। এ ছাড়া বাইসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরাটা ছিল তাঁর অনেক দিনের শখ। মনের শক্তির কারণে রোজা রেখেই বাইসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরা সম্ভব হয়েছে। ধরা দিয়েছে স্বপ্ন।

সান্তাহার পৌরসভার প্যানেল মেয়র জার্জিস আলম রতন বলেন, এপি যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে তা অন্য নারীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

এপির এমন সাহসিকতাকে স্বাগত জানিয়েছে তাঁর সহকর্মী, বন্ধু-বান্ধব, পরিবারের লোকজন ও স্বজনরা।


Source: kalerkantho

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *