কিউবার নতুন পেশা: লাইনে দাঁড়িয়ে অর্থ উপার্জন |

মহামারি করোনাকালে সুপারমার্কেটে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে দীর্ঘ লাইন ধরতে হচ্ছে কিউবানদের। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনেকে বাড়তি উপার্জন করছেন। 

ছবিতে বিস্তারিত- 

নতুন পেশা
মুদির দোকানের বাইরে লাইন করে দাঁড়িয়ে থাকাটা কিউবায় খুব সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু করোনাকালে অর্থনীতির সংকটের মধ্যে দ্রব্যের সংকটের কারণে এই লাইন আগের তুলনায় দীর্ঘ এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য হয়। আর এই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকাটাকে অনেকে নতুন পেশা হিসেবে নিয়েছেন।

বাজার করা যেনো দুঃস্বপ্ন
সুপারশপে বাজার করতে যাওয়াটা কিউবার অনেক মানুষের কাছে দুঃস্বপ্নের মত। মুরগী কিনতে কাউকে ৭/৮ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। দোকানের বাইরে দুইশ/তিনশ মানুষ দাঁড়িয়ে থাকাটা কিউবায় সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

করোনায় চাকরি হারানো
কিউবার মানুষের উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম হল পর্যটন। কিন্তু করোনায় পর্যটক না আসায় অনেকেই পুরোনো চাকরি ছেড়ে নতুন কাজ বেছে নিয়েছেন। অর্থনীতির বেহাল দশার মধ্যেই করোনা মহামারী দেখা দিয়েছে দেশটিতে।

রেমিটেন্স বন্ধ
যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নীতির কারণে সেখান থেকে কিউবায় অর্থ পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে রেমিটেন্সও বন্ধ। অর্থনীতি বাঁচাতে বছরের শুরুতে ‘মুদ্রা সংস্কার’ করেছে সরকার। আগে কনভার্টাইল পেসো সিইউসি-কে ননকনভার্টাইল পেসো সিইউপিকে পরিণত করা হয়েছে। অর্থাৎ আগে ডলার থেকে কনভার্ট করা গেলেও এখন তা বন্ধ রয়েছে।

মুদ্রা স্বল্পতা
বেশিরভাগ দোকানে এখনো পর্যাপ্ত সিইউপি না থাকায় তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মজুদের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।

কোলেরো
লাইনে দাঁড়িয়ে থাকাটা বয়স্কদের জন্য কষ্টকর এবং করোনাকালে তা বড় ধরনের ঝুঁকি। তাই অনেকেই একটি ব্যক্তিগত ব্যবসা শুরু করেছে, সরকার এই পেশার লোকজনের নাম দিয়েছে ‘কোলেরো’। এই ব্যক্তিরা ভোর থেকে দোকানের সামনে জায়গা দখল করে। যারা লাইনে বেশিক্ষণ না দাঁড়িয়ে দোকানে যেতে চায় তারা কোলেরোদের টাকা দিয়ে জায়গাটা কিনে দোকানে ঢুকতে পারে।

সরকারি পেশার পাশাপাশি অন্য কাজ
সরকারি পেশায় কেউ কেউ মাসে মাত্র ১২ ডলার বেতন পান। তাই সংসার চালাতে অনেকে অবৈধ কাজ করতেন, তারা এখন ‘কোলেরো’ হিসেবে কাজ করছেন। করোনার কারণে রাতে জরুরি অবস্থা জারি আছে। ভোর পাঁচটায় বাড়ি থেকে বের হওয়া যায়, দোকান খোলে সকাল ৯টায়।

পণ্য কিনে বেচা
দীর্ঘ সময় জায়গা দখল করে খুব সামান্য অর্থ উপার্জন হয় কোলেরোদের। তাই অনেকে নিজেরাই দোকানে ঢুকে পণ্য কিনে দ্বিগুণ দামে তা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের কাছে বিক্রি করে। তবে সম্প্রতি সরকার কঠোর নিয়ম করেছে। এক ব্যক্তি তার পরিচয়পত্র দেখিয়ে দিনে একবারের বেশি পণ্য কিনতে পারবে না।

সূত্র: ডয়েচি ভেলে।


Source: kalerkantho

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *