যে কারণে মোদির ভরাডুবি হলো পশ্চিমবাংলায়

নয়াদিল্লী, ০২ মে– পশ্চিমবাংলার নির্বাচনে যে এক্সিট পোল ছিলো সেই এক্সিট পোলের ফলাফল ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এক্সিট পোলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিলো মমতা ব্যানার্জি আর নরেন্দ্র মোদির মধ্যে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তো দূরে থাকুক দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয়ী হয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। এই নির্বাচনে জয়ী হতে নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ বারবার ছুটে এসেছিলেন পশ্চিমবাংলায়। কিন্তু তারপরও পশ্চিমবাংলার মানুষ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো। এই নির্বাচনে কেন এত বিপর্যয় ঘটলো বিজেপির, বিশেষ করে নির্বাচনের আগেও যখন মনে করা হচ্ছে যে বিজেপি শক্ত আসন কাটতে যাচ্ছে, কলকাতায় মমতা ব্যানার্জির অবস্থা টলটলায়মান হয়ে যাবে সেই রকম পরিস্থিতির মধ্যে কিভাবে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপির এত বড় বিপর্যয় ঘটলাে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা পাঁচটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন,

১. দল বদলের আত্মঘাতী নীতি: বিজেপি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার আগে তৃণমূল থেকে লোক ভাগিয়ে নেওয়ার নীতি গ্রহণ করেছিলো। শুভেন্দুসহ তৃণমূলের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে বিজেপিতে নিয়ে আসা হয়েছিলো। এরাই ১০ বছর মমতা ব্যানার্জির ডান হাত বাম হাত ছিলেন। ফলে সাধারণ জনগণ বুঝতে পারে যে, বিজেপি শুধুমাত্র ক্ষমতা চায়। এই জন্য সুবিধাবাদীদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে দলের মধ্যে। এটি সাধারণ মানুষ পছন্দ করে নি।

২. হিন্দুত্ববাদকে প্রত্যাখ্যান: নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনের প্রচারণার মূল কৌশল ছিলো হিন্দু ভোটারদেরকে একাট্টা করে জয় ছিনিয়ে আনা। কিন্তু এই সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ববাদী নীতিকে পশ্চিম বাংলার জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে।

৩. উন্নয়নের গালভরা বুলি: বিজেপি যে উন্নয়নের গালভরা বুলি দিয়েছে সেটি মানুষ বিশ্বাস করেনি এবং মানুষ মনে করেছে যে, এগুলো স্রেফ নির্বাচনে জেতার জন্য কথার কথা।

৪. মমতা দৃঢ়তা: নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ`র মতো ডাকসাইটে নেতাদের প্রচারণা, কেন্দ্রের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এবং নির্বাচন কমিশনকে পক্ষপাত করার চেষ্টার পরও মমতা ব্যানার্জি এতোটুকু দমে যান নি বরং নির্বাচনে তিনি তার সবটুকু উজাড় করে দিয়েছেন। তার পুরস্কার দিয়েছে পশ্চিমবাংলার জনগণ।

৫. করোনা পরিস্থিতি: অনেকেই মনে করেন যে, সারা ভারতে করোনার যে অবনতি এটি বিজেপির একটি ব্যর্থতা এবং ব্যর্থতার আঁচড় লেগেছে এই নির্বাচনে। মূলত এই ৫ কারণেই মোদির বিপর্যয় হয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সূত্র: বাংলা ইনসাইডার
এম এন / ০২ মে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *