কৃষক হত্যা: কঙ্কাল উদ্ধারের পর মোবাইল ফোনের সূত্রে মিলল খুনি

চট্টগ্রাম, ০৬ মে– চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরের ভাড়া বাসায় বসবাসকারী মো. রুবেল (২৭) চাষাবাদের কাজ করতেন। তার বাড়ি নীলফামারী জেলায়। ২০১৯ সালের নভেম্বরের শেষের দিকে হঠাৎ করেই নিখোঁজ হন। পরে তার ভাই মো. শামছুল হালিশহর থানায় জিডি করলেও কোনোভাবেই সন্ধান মিলছিল না রুবেলের। গত বছরের ২ মার্চ, রুবেল নিখোঁজ হওয়ার চার মাসের মাথায় হালিশহরের চৌচালা এলাকায় জমি খুঁড়তে গিয়ে এক ব্যক্তির কঙ্কাল মেলে। তখন রুবেলের ভাই দাবি করেন, সেই কঙ্কালটি তার ভাইয়ের। পরে ডিএনএ পরীক্ষায় তার সত্যতা পাওয়া যায়। কিন্তু খুনি শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। অবশেষে ধরা পড়েছে খুনি।

মামলাটির পেছনে লেগেছিল তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। শেষ পর্যন্ত লেগে থাকার ফল পাওয়া গেছে। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে রুবেলকে গুম করে হত্যার প্রায় দেড় বছর পর খুনিকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। উদ্ঘাটন করা হয়েছে খুনের কারণও।

বুধবার ভোরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে রুবেল হত্যায় জড়িত সোহরাব হোসেন বলীকে (৫৫) গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার আদালতে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগরের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা এ তথ্য জানিয়েছেন। গ্রেপ্তার সোহরাব হোসেনের বাড়ি লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব সিন্দুর্ণা গ্রামে।

পিবিআই কর্মকর্তা জানান, কঙ্কালের পরিচয় জানার পর হত্যাকারীকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছিল। পরে জানা যায় রুবেলের মোবাইল ফোনটি পাওয়া যাচ্ছে না। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সেই মোবাইলের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। মোবাইলটি যার কাছে ছিল, তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান, মোবাইলটি সোহরাবের কাছ থেকে তিনি কিনেছেন। সেই সূত্র ধরে প্রায় এক বছর চেষ্টার পর সোহরাবকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।

পিবিআই কর্মকর্তা আরও জানান, সোহরাব জানিয়েছে- রুবেলের কাছ থেকে সুদে ২৮ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। ছয় মাস পর রুবেল পুরো টাকা একসঙ্গে ফেরত চান। এ নিয়ে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় কৃষি জমিতেই তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে রুবেল কোদাল দিয়ে সোহরাবের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। তখন সোহরাব দা দিয়ে রুবেলের মাথায় কোপ দেয়। এতে রুবেলের মৃত্যু হলে সোহরাব তার মোবাইল ফোন নিজের হেফাজতে নিয়ে রুবেলকে সেখানেই গর্ত খুঁড়ে পুঁতে রাখে। তিন দিন পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গাজীপুরে চলে যায়।

জানা গেছে, সোহরাব হালিশহরে ওয়াসার জমিতে চাষাবাদ করত। আর রুবেল এর পাশের জমিতে চাষাবাদ করতেন। সোহরাবও হালিশহর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকত।

সূত্র : সমকাল
এম এন / ০৬ মে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *