মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা চীনা রকেটের ধ্বংসাবশেষ খণ্ডবিখণ্ড হয়ে ভারত মহাসাগরে পড়েছে। গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকায় এই ধ্বংসাবশেষ শেষমেশ কোথায় গিয়ে পড়ে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি উদ্বিগ্ন ছিল সাধারণ মানুষও। তবে সেই উদ্বেগ দূর করে গতকাল রবিবার সকালে মালদ্বীপের পাশে ভারত মহাসাগরে আছড়ে পড়ে সেটি।
জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি না হলেও এ ঘটনার জন্য চীনের দায়িত্ব অবহেলাকে দায়ী করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।
চীনের ওই রকেটের নাম ‘লংমার্চ ফাইভ বি ইয়াও-২’। গত বছর আরেকটি লংমার্চ রকেটের একটি টুকরা পড়েছিল আইভরি কোস্টের একটি গ্রামে। ওই ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও স্থাপনার ক্ষতি হয়েছিল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মহাকাশে বর্তমানে এমন ২০০ স্যাটেলাইট পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে, যেগুলো আবর্জনায় পরিণত হয়েছে এবং যেকোনো মুহূর্তে ‘টাইম বোমার’ মতো বিস্ফোরিত হতে পারে কিংবা অন্য স্যাটেলাইটের ওপর আছড়ে পড়ে লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলতে পারে। এসব ‘আবর্জনা’ এমন সব গুরুত্বপূর্ণ স্যাটেলাইটকে নষ্ট করতে পারে, যেগুলো জিপিএস ও আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, তাদের রকেটটির বেশির ভাগ অংশই বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার সময় ধ্বংস হয়ে যায়। এর কিছু অংশ ৭২.৪৭ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ এবং ২.৬৫ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ বরাবর আছড়ে পড়ে। ভারত মহাসাগরের যে এলাকায় এগুলো পড়েছে, তার অবস্থান মালদ্বীপের পশ্চিম দিকে।
রকেটের ধ্বংসাবশেষ বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মার্কিন সংস্থা ‘স্পেস কমান্ড’।
তবে এটি কোথায় পড়েছে, তা তারা জানায়নি।
বিশেষজ্ঞরাও ধারণা করছিলেন যে রকেটের টুকরাগুলো সাগরেই পড়বে। কারণ পৃথিবীর ৭০ শতাংশই পানি। যদিও এর গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকায় কিছুটা হলেও উদ্বেগ ছিল।
হার্ভার্ডের জ্যোতির্বিজ্ঞানী জনাথন ম্যাকডয়েল এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘পরিসংখ্যানের দিক থেকে দেখলে এটি সাগরে পড়ার আশঙ্কাই সবচেয়ে বেশি ছিল। এটি চীনের জন্য একটা জুয়া ছিল। তারা জিতে গেছে। তার পরও বলব, এটা একটা দায়িত্বহীন ব্যাপার।’ ম্যাকডয়েল বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা এড়াতে চীনের উচিত তাদের রকেকটির পুনঃ নকশা করা।’
উচ্চাভিলাষী মহাকাশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ২৯ এপ্রিল ওয়েনচ্যাং স্পেস কেন্দ্র থেকে রকেটটি উৎক্ষপণ করে চীন। রকেটটি নতুন এবং স্থায়ী স্পেস স্টেশনটির একটি মডিউল কক্ষপথে বহন করতে এটি ব্যবহার করা হয়। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।
Source: kalerkantho