‘ঈদের বাজার লইয়া অহন আমার আর কোনো টেনশন নাই’ |

বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাপড় বিক্রি করেন রেজিয়া আক্তার। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৌর এলাকার ফুলবাড়িয়ার বাসিন্দা ওই নারী বসুন্ধরা গ্রুপের নাম শুনেছেন। এমন কম্পানি খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে জেনে তিনি খুশি হন। জানান, আগে থেকে দেওয়া কাগজ দেখে বুঝেছেন বসুন্ধরা গ্রুপ খাদ্য সহায়তা দেবে। খাদ্য সহায়তা পেয়ে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ বসুন্ধরা গ্রুপরে উন্নত করুক। যা পাইছি তাদের কাছ থেকে তাতে শুকরিয়া।

খাদ্য সহায়তা নিতে এসেছিলেন এক মুক্তিযোদ্ধাও। আপাতত ভাতা বন্ধ থাকায় তিনি বেশ অসহায়। সবার সঙ্গে চেয়ারে তিনি বসেছিলেন। বিষয়টি দৃষ্টিকটু মনে করে সেখান থেকে অন্যত্র বসতে দেওয়া হয় ওই মুক্তিযোদ্ধাকে। খাদ্য সহায়তা পেয়ে তিনিও বেশ খুশি হয়েছেন।

সুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে শুভসংঘের সহযোগিতায় সোমবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে জড়ো হয়েছিলেন অসহায় অনেক নারী-পুরুষ। বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তা পেয়ে সবাই দোয়া করেন। খাদ্য সহায়তার মধ্যে ছিল চাল, ডাল, ছোলা, সেমাই, তেল, চিনি, লবণ।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনিও বসুন্ধরা গ্রুপসহ পত্রিকাকে এ উদ্যোগ নেওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক তাণ্ডবের বিষয়ে ঘৃণা প্রকাশ করেন।

ের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল বাবুর সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন, শেখ মো. আনার, মো. শাহ আলম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সাংবাদিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক মো. মনির হোসেন, সদর উপজেলা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. লোকমান হোসেন, যুবলীগ নেতা আলী আজম, মো. জসিম উদ্দিন রানা প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন শুভসংঘের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সভাপতি মো. হেদায়েতুল আজিজ মুন্না।

শুভসংঘের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শারমীন সুলতানা, ডা. নুরুল হুদা পাভেল, সুমন রায়, হাবিবুর রহমান পারভেজ, গাজী তানভীর, চয়ন বিশ্বাস, প্রসন্ন দাস, সৌমেন পাল, মাজহারুল করিম অভি প্রমুখ।

আগে থেকে কোনো টোকেন না পেয়েও খাদ্য সহায়তা নিয়ে যাওয়া বারেয়া আক্তার খুশিতে আত্মহারা ছিলেন। এত ওজনের বস্তা কিভাবে তিনি নিয়ে যাবেন সে ভাবনায় ছিলেন তিনি। পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের জন্য দোয়া করেন।

কান্দিপাড়া এলাকার সাফিয়া খাতুন নামে এক নারী বলেন, বয়স হইছে না দেইক্কা বয়স্ক বাতা ফাই না। ১৫ বছর আগে স্বামী মরলেও বিধবা বাতা দেয় না। একবার একটা কম্বল পাইছিলাম। আর কেউ কিছু আমারে দিছে না। এইবার এই সাহাইজ্জ পাইয়া ইডডা বালা কইরাই করতাম ফারুম।

নয়নপুর এলাকার টিটু মৃধা নামে এক উপকারভোগী বলেন, একবারে এত বেশি জিনিস আগে কোনো সম পাইছি না। যারা দিছে হেরার লাইগ্যা দোয়া ছাড়া আর কি করুম। হেরার আর উন্নতি অউক। আল্লাহ হেরারে বালা রাহুক।

একই এলাকার মো. আলাউদ্দিন বলেন, ের লাইগ্যা আমার জীবনডা পাল্টাডাই গেছে। আমার পরিবারের অবস্থা লইয়া নিউজ হইছে পড়ে কত কিছু যে পাইছি। ের লোকজনরে দেকলেঅ বালা লাগে। অহন আবার ের মালিক বসুন্ধরা গ্রুপ অনেক কিছু দিলো। ঈদের বাজার লইয়া অহন আমার আর কোনো টেনশন নাই।


Source: kalerkantho

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *