ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডব একাত্তরের বর্বরতাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে |

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডব একাত্তরের পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরতা, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফিরে বাম জোট নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তান্ডবের জন্য প্রধানতঃ হেফাজতে ইসলামই দায়ী। কিন্তু হেফাজতের তান্ডবের সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সিভিল প্রশাসন কেন নিষ্ক্রিয় ছিলো, সেটাই বড় প্রশ্ন।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলানায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তারা একথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাম জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল্লাহ আল কাফি রতন, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা মানস নন্দী, ইউসিবিএল’র কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের বাচ্চু ভুইয়া, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের হামিদুল হক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ, বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আকবর খান, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আব্দুল আলী প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হবার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ৬ দফা দাবি উত্থাপন ও তা দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, হরতাল ও বিক্ষোভ চলাকালে সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, মন্দির ও উপাসনালয় ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের সাথে জড়িত ও উস্কানিদাতাদের বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করতে হবে। তাদেরকে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। জেলার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সিভিল প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও দায়িত্ব পালনে অবহেলার জন্য ডিসি, এসপিসহ সংশ্লিষ্টদের অপসারণ ও বিচার করতে হবে। তদন্ত করে তাদের নিস্ক্রিয় থাকার কারণ দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে হবে।

আরো বলা হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষের মধ্যে এখনো আতংক ও নিরাপত্তাহীনতা কাজ করছে। ফলে নাগরিকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গন, মন্দির, সাংস্কৃতিক ক্লাবসহ ক্ষতিগ্রস্থ বেসরকারি স্থাপনার জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ওই সকল দাবি আদায় ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি প্রতিহত করতে সকল বাম-প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

উল্লেখ্য, গত ২৬, ২৭ ও ২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের ডাকা বিক্ষোভ ও হরতাল চলাকালে সংঘটিত প্রকৃত ঘটনা জানতে বাম জোটের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল গত ৪ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়ীয়া পরিদর্শন করে।


Source: kalerkantho

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *