উন্নয়নশীল আট দেশের জোট ডি-৮ এর সদস্যরা নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ জোরদারে পরিবহন কানেক্টিভিটি সৃষ্টি ও জোরদারের সম্ভাবনা যাচাইয়ে সম্মত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ডি-৮ এর দশম শীর্ষ সম্মেলনে ওই ঐক্যমত হয়। সম্মেলন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এবারের ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে ‘ঢাকা ঘোষণা-২০২১’ ও ডি-৮ দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা জোরদারে আগামী ১০ বছরের রূপরেখা গৃহীত হয়েছে।
ঢাকা ঘোষণায় কভিড-১৯ ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী আন্তর্জাতিক কম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনায় সহযোগিতা করতে সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সেখানে আরো বলা হয়েছে, কভিড-১৯ এর মতো মহামারির বিরূদ্ধে লড়াইয়ে ‘মহামারি রোগ তহবিল’ সৃষ্টির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সরকারি/বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যবসা-বাণিজ্য, যুব উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডি-৮ সদস্য দেশগুলোকে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। এ সময় তিনি রোহিঙ্গা ফেরাতে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানান। সবাইকে সর্তক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সংকটের সমাধান না হলে এটি আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার দশম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী এ সম্মেলনে ডি-৮ এর সভাপতিত্ব গ্রহণ করেছেন। সম্মেলনে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্কের নেতারা সংযুক্ত ছিলেন। তারাও সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে যুবশক্তিকে কাজে লাগানো, তথ্যপ্রযুক্তি সম্ভবনার পূর্ণ ব্যবহার, প্রয়োজনীয় আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক ও অবকাঠামোগত কাঠামো তৈরি, কানেকটিভিটি বাড়ানো, ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ব্যবসায়িক ধারণা, মডেল, উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিতে তরুণদের শক্তি ও সম্ভাবনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, বেসরকারি, এমনকি সরকারি থেকে বেসরকারি পর্যায়েও ব্যবসা উদ্যোগের মাধ্যমে আমাদের দেশগুলোর (ডি-৮) যুবকদের একত্রিত হতে উৎসাহিত করা যেতে পারে। ডি-৮ বিজনেস ফোরামের সঙ্গে প্রথম ডি-৮ ইয়ুথ সম্মেলনটি একটি বিরল সুযোগ তৈরি করেছে।
তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে কার্যকরী পার্টনারশিপ এবং বৃহত্তর সহযোগিতা প্রয়োজন। তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে যুবদের খুব ভালো সম্পৃক্ততা কভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও আমাদের অর্থনীতিকে সচল রেখেছে।
দশম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনে অন্যান্য ডি-৮ রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরাও ভার্চুয়াল মাধ্যমে শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন। সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্কের নেতারা সংযুক্ত ছিলেন।
সম্মেলনে ৩৮ দফা যৌথ ঘোষণায় কভিড মহামারি ও এর প্রভাব মোকাবিলায় সদস্য দেশগুলোর সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। ইরানে ডি-৮ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সদস্য দেশগুলো।
Source: kalerkantho