করোনা মোকাবেলায় এবার যুক্তরাজ্য ছাড়া পুরো ইউরোপ ও আরো ১২ দেশের যাত্রী প্রবেশে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আগামীকাল শনিবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। ইউরোপের বাইরে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া বাকি ১২ দেশ হলো আর্জেন্টিনা, বাহরাইন, ব্রাজিল, চিলি, জর্দান, কুয়েত, লেবানন, পেরু, কাতার, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক ও উরুগুয়ে।
গতকাল বেবিচকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেসব এয়ারলাইনস এসব দেশ থেকে বাংলাদেশে নিয়মিত যাত্রীবাহী ফ্লাইট পরিচালনা করে, তারা নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে শুধু ট্রানজিট যাত্রী আনতে পারবে। তবে সে ক্ষেত্রে ওই যাত্রীদের সেই সব দেশে ট্রানজিটের সময় অবশ্যই বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের মধ্যে থাকতে হবে।
বেবিচক জানিয়েছে, অনুমোদিত দেশ থেকে বাংলাদেশে আসার সময় যাত্রীদের করোনামুক্ত সনদ থাকতে এবং বিমানবন্দরে তা দেখাতে হবে। উড়োজাহাজে ওঠার ৭২ ঘণ্টা বা তার কম সময়ের মধ্যে নমুনা দিয়ে পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে এই কভিডমুক্ত সনদ পেতে হবে। টিকা দেওয়া কিংবা না দেওয়ায় এই নিয়মের কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরে যাত্রীদের মধ্যে করোনার কোনো লক্ষণ-উপসর্গ না থাকলে তাদের বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। তবে বিমানবন্দরে কারো লক্ষণ-উপসর্গ দেখা গেলে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে সরকার নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানে বা হোটেলে নিজ খরচে ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকতে হবে।
এদিকে ইউরোপের অন্যান্য দেশের চেয়ে যুক্তরাজ্যে কভিড পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় দেশটির সঙ্গে ফ্লাইট চলাচল চালু রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেবিচক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান। গতকাল কুর্মিটোলায় বেবিচক কার্যালয়ে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে এখন কভিড পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। এ কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যে সতর্কতা ছিল, তা-ও কমানো হয়েছে। এই বিবেচনায় আমরা ইউকেকে বাদ দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘যেহেতু ইউকের কন্ডিশন ভালো, তাই সেখান থেকে যে যাত্রীরা আসবেন, তাঁরা হোম কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যে ডাটা এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ইউরোপের ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা থেকে ইউকে বেরিয়ে এসেছে। এখানে আমাদের দেশেরও কিছু স্বার্থ আছে, সেখানে অনেক বাংলাদেশি থাকেন। তাই অহেতুক কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ঠিক হবে না।’
তিনি বলেন, ‘ইউরোপ ও ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাসহ লাতিন আমেরিকার অনেকগুলো দেশ আছে, সেসব দেশে সংক্রমণের হার অনেক বেশি। এসব দেশ থেকে আপাতত আমরা আগমন বন্ধ করেছি। প্রায় ৩০টির মতো দেশ থেকে আপাতত বাংলাদেশে প্রবেশ করা যাবে না।’
এদিকে কেয়ারেন্টিন নিয়ে বেবিচক জানিয়েছে, যেসব দেশ থেকে বাংলাদেশে আসার বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, সেসব দেশের যাত্রীদেরও প্রত্যেকের করোনা নেগেটিভ সনদ (৭২ ঘণ্টা আগের পরীক্ষা করা) থাকতে হবে। এ ছাড়া নিষিদ্ধ দেশে ট্রানজিট নেওয়া যাত্রীদের চার দিন বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। আর যদি করোনার কোনো লক্ষণ থাকে, তাহলে নিজ খরচে সরকার নির্ধারিত স্থানে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
Source: Kalerkantho.com