শিকলে বাঁধা সেই বৃদ্ধ জহরুলের দায়িত্ব নিলেন ইউএনও |

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় প্রায় দুই বছর ধরে নিজ গৃহে শিকলবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন জহরুল ইসলাম (৭০) নামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধ। এ নিয়ে দৈনিক পত্রিকায় ‘শিকলে বাঁধা বৃদ্ধ জহরুলের জীবন’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। আর তা দেখে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সামিউল আমিন ওই বাড়িতে গিয়ে বৃদ্ধের শিকল খুলে দিয়ে চিকিৎসাসহ সব খরচের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। এ ঘটনায় ইউএনওকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।

মঙ্গলবার (৪ মে) রাত ৯টার দিকে হাতীবান্ধা উপজেলার সিংঙ্গীমারী গ্রামের ওই বৃদ্ধের বাড়িতে গিয়ে তাকে শিকলবন্দি থেকে মুক্ত করেন। বৃদ্ধ জহরুল ইসলাম হাতীবান্ধা উপজেলার সিংঙ্গীমারী ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

জানা গেছে, ৪ বছর আগে জহুরুলের স্ত্রী শরীফা বেগম প্যারালাইসে আক্রান্ত হয়ে ১ হাত ১ পা অচল হয়ে যায়। টাকার অভাবে স্ত্রীর চিকিৎসা করতে ব্যর্থ হয় সে। অর্থ কষ্ট আর দুচিন্তায় জহুরুল ইসলাম মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। বাবা-মায়ের এমন পরিস্থিতি দেখে ছোট ছেলে শহিদুল ইসলাম শত কষ্টের পরেও বাবা-মায়ের দায়িত্ব নেয়। এ অবস্থায় কয়েকবার নিখোঁজ হয় বৃদ্ধ জহরুল। আর তাই প্রতিদিন বাড়ির উঠানে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় ওই বৃদ্ধকে।

বৃদ্ধের ছেলে শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু ইউএনও স্যার বাবার চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করবেন। আমরা এই ঋণ কোনোদিন ভুলব না। 

বৃদ্ধ জহরুল ইসলামের স্ত্রী শরীফা বেগম বলেন, ইউএনও স্যারের জন্য দোয়া করি। আল্লাহ্ তার মঙ্গল করবেন।

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংসদ কমান্ডের হাতীবান্ধা উপজেলা শাখার আহবায়ক রোকনুজ্জামান সোহেল, ইউএনও স্যার যে মানবিক কাজটি করেছেন তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ যাপন করছি।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সামিউল আমিন বলেন, দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ দেখে জেলা প্রসাশক ডিসি স্যার আমাকে অবগত করেন। ওই বৃদ্ধকে শিকলবন্দি থেকে মুক্ত করা হয়েছে। তাকে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসা ও পরিবারের সব দায়িত্ব উপজেলা প্রশাসন বহন করবেন।


Source: kalerkantho

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *